রাত্রি বললো, ‘আপনাকে আমার কি মনে হয় জানেন?’
‘কী?’
‘দুঃখী হাস্যমুখী।’
‘দুঃখী হাস্যমুখী?’ অবাক গলায় জিজ্ঞেস করল ধ্রুব।
‘হুম। এখন থেকে আমি আপনার নাম দিলাম দুঃখী হাস্যমুখী।’
শুনে আবারও হাসে ধ্রুব। তারপর বলে, ‘এই শব্দতো এর আগে কখনো শুনিনি! এর মানে কী?’
‘এই যে আপনি সারাক্ষণ হাসেন। দেখে মনে হয়, আপনার কোথাও কোনো দুঃখ নেই, বিষাদ নেই, একাকীত্ব নেই। অথচ বুকের ভেতর আস্ত এক নোনাজলের সমুদ্র পুষে ঘুরে বেড়ান।’
‘এমন মনে হয় আমাকে?’
‘আগে হতো না। এখন হয়। আমার খুব প্রিয় এক শিক্ষক ছিলেন। তিনি বলতেন মানুষ হলো সোনামুখী সুঁইয়ের মতো। আর তার জীবন যেন নকশিকাঁথা। সে সারা জীবন অবিরাম চেষ্টা করে যায় নিজের জীবনটাকে নিখুঁত কারুকার্যময় করে ফুটিয়ে তুলতে। নানা রঙের সুতোয়, গল্পে রাঙিয়ে তুলতে। কিন্তু দিনশেষে দেখে, সেখানে কেবল দুঃখের রঙ আর গল্পই গাঢ় হয়ে উঠেছে। সে মূলত তার জীবনের নকশিকাঁথায় জীবনভর খুব যত্ন করে অনন্ত হাহাকার আর আক্ষেপের গল্প সেলাই করে গেছে।’
ধ্রুব কথা বলল না। চুপ করে রইলো। রাত্রি বলল, ‘স্যার এই কথাটা আরও সুন্দর করে বলতেন। বলতেন-
দুঃখী তুই?
ঠিক যেন নকশিকাঁথার বুকে
সোনামুখী