এই দুনিয়াকে দেখবার বাসনায় মানুষ যখন চোখ মেলে তখন সে কী দেখে? সবই তো দৃশ্যের খেলা। এই জগৎ এইসব বানোয়াট দৃশ্যের কারখানা। উত্তাল দরিয়ার ঢেউয়ের তালে তালে শুরু হওয়া মাছেদের মৃত্যুর কোলাহল।
একজন পেশাদার খুনি ভাগ্যের ফেরে মিশে যায় সেই কোলাহলে, কখনো দশ দিগন্তের হাওয়া এসে তাকে উতলা করে, আর সেই উতলা হাওয়ায় সে ঘুরে বেড়ায় বসন্ত থেকে বসন্তে। কিন্তু জীবন তো শুধু প্রতিশোধ কিংবা প্রণয় নয়, ফলে প্রার্থনার নামে তার অন্তর্গত মহাজাগতিক প্রশ্ন ঘুরে বেড়ায় অন্ধকার থেকে অন্ধকারে। কতক সে ধরতে পারে, কতক তার হাত ফসকে বেরিয়ে যায়, সে সেসবের খবর রাখে না।
আর থাকে দেশ, ঘূর্ণির ভেতর ঘুরতে থাকা স্বপ্ন, মুঠোয় ধরে থাকা হাওয়ার মতো বিপ্লবের বাসনা। সেই সমস্ত বাসনাও মূলত প্রেম আর মৃত্যুর সুফলা সংগীত।
মুরাদ কিবরিয়ার এই উপন্যাসটি মূলত এক বিপুল আখ্যানকে ধারণ করেছে, যেখানে নানা অদ্ভুত চরিত্রের মানুষেরা সবকিছু বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছে জীবনের অলঙ্ঘনীয় উত্তাল সংগ্রামে। সেখানে প্রেম, প্রার্থনা আর মৃত্যু— সব একাকার হয়ে তাদেরকে আছড়ে ফেলেছে জীবনের চোরাবালিতে।
উপন্যাস-সাহিত্যের প্রচলিত গতানুগতিক গল্প এবং ভাষার প্রভাব থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নতুন ধরনের এক কল্পনার জাদুময় জগৎ তিনি সৃষ্টি করেছেন।
সেই বহুরূপী কল্পনার জগতে পাঠককে স্বাগত।